ভুমিকাঃ
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান সমুহকে কারিগরী সহায়তা প্রদান, পল্লী ও শহরাঞ্চলের অবকাঠামো উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ সহ ক্ষুদ্রাকার পানি সম্পদ উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ন অবদান রাখছে। একটা সময় ছিল যখন বাংলাদেশে গ্রামীন এলাকার যোগাযোগ অবকাঠামো ছিল অত্যন্ত নাজুক । আজ এলজিইডির মাধ্যমে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ডের মাধ্যমে দেশের সবর্ত্র গ্রামীণ যোগাযোগের ক্ষেত্রে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। আজ গ্রামের উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করণ ও পরিবহন সুবিধা বৃদ্ধি পেয়ে কৃষকদের উৎপাদিত পন্যের ন্যায্য মূল্যে প্রাপ্তি নিশ্চিত হচ্ছে। এছাড়াও পরিবেশের ভারসাম্য সংরক্ষণ ও দারিদ্র বিমোচনের লক্ষ্যে সরকারের জাতীয় কর্মসূচি বাস্তবায়নে ও এলজিইডি গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করছে। বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থয়নে ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার সহায়তায় এলজিইডি বিভিন্ন প্রকল্প ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। সিটিজেন চার্টার হল জনগণের সেবা পাওয়ার অধিকারের লিখিত সনদ। এর মাধ্যমে জনসাধারণের আশা আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটিয়ে বিদ্যমান সেবাসমুহের মান উন্নয়নের সুযোগ সৃষ্টি হয় । সিটিজেন চার্টারের মাধ্যমে সেবা গ্রহনকারিদের যথাসময়ে সেবা প্রদান নিশ্চিতকরা হয়। সেবা প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের কর্মকান্ডের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও প্রশাসনের গতিশীলতা বৃদ্ধি পায় । সিটিজেন চার্টারের মাধ্যমে সেবা গ্রহণকারী ও প্রদানকারীর মধ্যে পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধি পায় ।
এলজিইডি’র মুখ্য দায়িত্বাবলীঃ·
পল্লী ও নগর অঞ্চলে অবকাঠামো উন্নয়নের লক্ষ্যে পরিকল্পনা প্রণয়ন, বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ, পল্লী অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ, গ্রোথসেন্টার/হাটবাজার উন্নয়নে পরিকল্পনা প্রণয়ন, বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ, ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা পরিষদ ও পৌরসভাকে কারিগরী সহায়তা প্রদান, ইউনিয়ন, উপজেলা ও পৌরসভা প্লানবুক, ম্যাপিং ও সড়ক এবং সামাজিক অবকাঠামোর ডাটাবেজ প্রস্তুতকরণ, ক্ষুদ্রাকার পানি সম্পদ উন্নয়ন পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অবকাঠামো উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ, জনপ্রতিনিধি, উপকারভোগী, ঠিকাদার, চুক্তিবদ্ধ শ্রমিকদল সমূহের সংশ্লিষ্ট উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে প্রশিক্ষণ, ডিজাইন ও অন্যান্য কারিগরী মডেল, ম্যানুয়েল ও স্পেসিফিকেশন প্রণয়ন, এলজিইডি’র কর্মকর্তা/কর্মচারীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধি।
এলজিইডি’র খাতওয়ারী প্রধান প্রধান কর্মকান্ডঃ
গ্রামীণ অবকাঠামোঃ
১ ।সড়ক নির্মান/পুননির্মাণ/ পুর্নবাসন
২।ব্রিজ/ কালভার্ট নির্মাণ/ পুননির্মাণ
৩।গ্রোথ সেন্টার/হাট বাজার উন্নয়ন
৪।ঘাট/জেটি নির্মাণ
৫।ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মাণ
৬।উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ/পুননির্মাণ
৭।ঘূর্নিঝড়/বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ/পুননির্মাণ
৮।বৃক্ষরোপন কর্মসূচী
৯।ক্ষুদ্র-ঋন কর্মসূচী
১০।কৃষি, মৎস্য ও পশু সম্পদ উন্নয়ন
১১।অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ
নগর অবকাঠামোঃ
১।সড়ক/ফুটপাত নির্মাণ/ পুননির্মাণ
২।নর্দমা নির্মাণ/ পুননির্মাণ
৩।বাস/ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ
৪।বাজার উন্নয়ন
৫।টাউন সেন্টার নির্মাণ
৬।স্যানেটারী ল্যাট্রিন নির্মাণ
৭।টিউবওয়েল স্থাপন
৮।ক্ষুদ্র-ঋন কর্মসূচী
৯।বর্জ্য ব্যবস্থাপনা
১০।বস্তি উন্নয়ন কার্যক্রম
১১।নগর পরিচালনা উন্নতি করণ
১২।দারিদ্র বিমোচন
১৩।নগর প্রশাসনের সক্ষমতা বৃদ্ধি
ক্ষুদ্রাকার পানি সম্পদ উন্নয়নঃ
১।বাঁধ নির্মাণ
২।সুইচ গেট নির্মাণ
৩।রাবার ড্যাম নির্মাণ
৪।খাল খনন ও পুনঃ খনন
৫।বন্যা নিয়ন্ত্রণ, বাঁধ নির্মাণ/ পুননির্মাণ
৬।স্থানীয় পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতিকে (পাবসস) বিভিন্ন কারিগরী ও জীবিকা উন্নয়নে সহায়তা প্রদান
এলজিইডি’র প্রশাসনিক স্তর
এলজিইডি’র বিস্তৃত কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য নিম্ন বর্ণিত উপায়ে প্রশাসনিক নেটওয়ার্ক সারা দেশে বিস্তৃত আছে । এলজিইডি’র প্রধান প্রকৌশলী দাপ্তরিক প্রধান হিসাবে আগারগাঁও, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা-১২০৭ অবস্থিত সদর দপ্তরে এলজিইডি দপ্তর পরিচালনা করছেন। তাছাড়া সদর দপ্তরে ৪ জন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী, ৭জন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, ১৭জন নির্বাহী প্রকৌশলী সহ মোট ১৪৬জন কর্মকর্তা কর্মচারী বিভিন্ন ইউনিটে কর্মরত আছেন ৷ সদর দপ্তরে এলজিইডি’র কর্মকান্ড নিম্ন বর্ণিত ইউনিটের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়ে থাকেঃ- প্রশাসন, পরিকল্পনা, ডিজাইন, সমন্বিত পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা (IWRM), পরিবেশ ব্যবস্থাপনা, মনিটরিং ও মূল্যায়ন, ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (MIS), জিআইএস (জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সিস্টেম), নগর ব্যবস্থাপনা, মান নিয়ন্ত্রণ, প্রশিক্ষণ, রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থাপনা, সড়ক নিরাপত্তা, ক্রয় কার্যক্রম (Procurement), তথ্য ইউনিট । এলজিইডি’র কর্মকান্ড সারাদেশে ১০টি অঞ্চল যেমন, ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, বরিশাল, সিলেট, রংপুর, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা এবং ফরিদপুর অঞ্চলের মাধ্যমে বিস্তৃত ৷ প্রতিটি অঞ্চলের দায়িত্বে রয়েছেন একজন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী । প্রতিটি অঞ্চলে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর অধীন নির্বাহী প্রকৌশলী এবং সহকারী প্রকৌশলীসহ মোট ৮জন কর্মকর্তা কর্মচারীরয়েছেন-যারা অঞ্চলের আওতাভূক্ত জেলার ন্যস্ত প্রশাসনিক দায়িত্ব সহ এলজিইডি’র কর্মকান্ড মনিটরিং ও তদারকী করে থাকেন। ৬৪টি জেলার প্রতিটি জেলা সদরে নির্বাহী প্রকৌশলীর নেতৃত্বে ২জন সহকারী প্রকৌশলীসহ মোট ১৩ জন কর্মকর্তা/কর্মচারী জেলার সকল এলজিইডি’র কর্মকান্ড পরিচালনা করছেন । তাছাড়া বৃহত্তর জেলায় ১ জন মেকানিক্যাল প্রকৌশলী রয়েছেন; ৪৮২ টি উপজেলার প্রতি টিতে উপজেলা প্রকৌশলীর নেতৃত্বে সহকারী উপজেলা প্রকৌশলীসহ মোট ১৯ জন কর্মকর্তা/কর্মচারী উপজেলা পরিষদের উন্নয়ন কর্মকান্ড ও রক্ষণাবেক্ষণ কর্মকান্ড পরিচালনা সহ এলজিইডি’র কর্মকান্ড পরিকল্পনা ও তারকারিতে নিবার্হী প্রকৌশলীকে সহযোগীতা করে থাকেন।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস